Logo

বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার খেকো প্রকৌশলী মতিন

profile picture
বশির হোসেন খান
৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১৩:১১
49Shares
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার খেকো প্রকৌশলী মতিন
ছবি: পত্রিকা থেকে নেওয়া।

সরকারি প্রকল্প মানেই উন্নয়ন, অবকাঠামো ও জনগণের কল্যাণ এই ধারণার ছায়া যেন ধীরে ধীরে ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। তার বড় উদাহরণ হতে পারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অধীন প্রায় ৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকার ড্রেজার ও জলযান সংগ্রহ প্রকল্প, যেখানে উন্নয়নের নামে ঘটেছে ভয়াবহ অর্থ আত্মসাৎ।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা এই অর্থ লোপাটের মাস্টার মাইন্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মতিন, যিনি সরকারি চাকরি করেও গড়ে তুলেছেন একাধিক বাড়ি, গাড়ি এবং অঢেল সম্পদের সাম্রাজ্য।

তিনি আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিচিত। বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং খেকো আব্দুল মতিন সবাই চেনেন। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটির প্রাথমিক বাজেট ছিল ৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা, যা পরবর্তীতে সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকায়। লক্ষ্য ছিল, ৩৫টি ড্রেজার ও ১৬১টি জলযান সংগ্রহ ৩টি ড্রেজার বেইজ নির্মাণ নারায়ণগঞ্জে একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ বাস্তবে হয়নি, হয়েছে কেবল নথিপত্রে। ড্রেজিং কাজের নামে খরচ দেখানো হলেও মাটিতে তার কোনো চিহ্ন নেই।

বিজ্ঞাপন

মোংলা-মাছিয়াখালী এবং যশোরের ভৈরব ও খুলনার আন্টিহারা নৌপথ ড্রেজিং প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে উঠেছে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।

অভিযোগ সূত্র বলছে, টাঙ্গাইলে পৈত্রিক বাড়ির পাশেই বহু কোটি টাকার জমি ও স্থাপনা রয়েছে। পরিবার-পরিজনের নামে রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের অর্থ, রয়েছে গাড়ি ও অন্যান্য স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। একজন সরকারি প্রকৌশলী হিসেবে তার বৈধ আয়ের পরিমাণ দিয়ে এইসব সম্পদের মালিক হওয়া প্রায় অসম্ভব।

প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের ছত্রছায়া, দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, আব্দুল মতিন কেবল একা নন। আরো কয়েকজন রয়েছে প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে এই দুর্নীতির জাল বিস্তার লাভ করে। তদন্ত বলছে, তারা নিজেরাও সরাসরি কিংবা পরোক্ষভাবে এই দুর্নীতির লাভভোগী।

বিজ্ঞাপন

বিআইডব্লিউটিএর তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে এন্টারপ্রাইজ এই দুর্নীতির এই চক্রের আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। অভিযোগ রয়েছে, বিআইডব্লিউটিএর প্রায় ২০ জন প্রকৌশলী তার ঠিকাদারি লাইসেন্স ব্যবহার করে প্রকল্পের কাজ পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি ‘ডিএলআই বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি আবাসন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, যেখানে ওই প্রকৌশলীরা শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এই বিনিয়োগের অর্থ কোথা থেকে এসেছে তা নিয়েও তদন্তে রয়েছে গুরুতর প্রশ্ন।

এই বিশাল দুর্নীতির প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াতকে অভিযোগ অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। আব্দুল মতিন, তার স্ত্রী শাহানা আক্তার জলি ও দুই সন্তানের নামে থাকা সম্পদের হিসাব জানতে ব্যাংক, রাজউক, ভূমি অফিস, কর বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। ১৮ জুনের মধ্যে সব তথ্য জমা দিতে বলা হলে তিনি এখনো জমা দেননি। তথ্য বিশ্লেষণের পর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপন করা হবে, যার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

জেবি/এসডি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD