বিপিএল শুরুর আগমুহূর্তে দল প্রত্যাহারের আবেদন চট্টগ্রাম রয়্যালসের

টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে আর্থিক সংকটের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে বিপিএল থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছে চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজি।

চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিক কাইয়ুম রশিদ বিসিবি বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে দল পরিচালনায় আর্থিক অসুবিধার কথা তুলে ধরে আসর থেকে সরে দাঁড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু।

আরও পড়ুন: লোহিত সাগরের বিলাসবহুল ভিলা কিনলেন রোনালদো

এ প্রসঙ্গে বিসিবির পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, “আজ সকালে আমরা চিঠিটি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সিদ্ধান্ত যাই হোক, খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্টদের বিষয়গুলো আমাদের ম্যানেজ করতে হবে। চিঠিতে অনেক কথা বলা হয়েছে, তবে মূল কারণ হিসেবে আর্থিক সমস্যার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।”

চট্টগ্রাম রয়্যালসকে ঘিরে বিপিএল শুরুর আগে থেকেই নানা আলোচনা চলছিল। এর আগে বিসিবি চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ব্যক্তিকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এসবের মধ্যেই সরাসরি দল প্রত্যাহারের আবেদন করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

গত বিপিএলে ক্রিকেটার ও স্টাফদের পারিশ্রমিক বকেয়া রাখার অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজি। যদিও এবার মালিকানা পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন করে যাত্রা শুরুর কথা জানানো হয়েছিল।

তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি ও ব্যাংক গ্যারান্টি বাবদ বিসিবির সব আর্থিক পাওনা পরিশোধ হয়েছে কি না—তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। এ বিষয়ে বিসিবি পক্ষ থেকে শর্ত পূরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও, হঠাৎ দল প্রত্যাহারের আবেদনে সেই আশ্বাস নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

এর মধ্যেই চট্টগ্রাম রয়্যালসের প্রস্তুতিতে বড় ধাক্কা আসে বিদেশি ক্রিকেটারদের বিষয়ে। টুর্নামেন্ট শুরুর কয়েকদিন আগে দলটির তিন বিদেশি ক্রিকেটার বিপিএল থেকে নাম প্রত্যাহার করেন। তারা হলেন—পাকিস্তানের লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ, আয়ারল্যান্ডের ওপেনার পল স্টার্লিং এবং শ্রীলঙ্কার উইকেটকিপার-ব্যাটার নিরোশান ডিকভেলা।

জানা গেছে, পল স্টার্লিং ও নিরোশান ডিকভেলা নিজ নিজ দেশের ক্রিকেট বোর্ডের কাছ থেকে ছাড়পত্র (এনওসি) না পাওয়ায় বিপিএলে খেলতে না আসার সিদ্ধান্ত নেন। অন্যদিকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আবরার আহমেদের এনওসি স্থগিত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানা যায়।

আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনার বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন ডি মারিয়া

বিদেশি ক্রিকেটারদের বিদায়ের পাশাপাশি কোচিং স্টাফ নিয়েও অনিশ্চয়তা কাটেনি চট্টগ্রাম রয়্যালসের। শুরুতে প্রধান কোচ হিসেবে দেশীয় কোচ মমিনুল হকের নাম জানানো হলেও পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত বদলে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ জাস্টিন মাইলস ক্যাম্পকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দেয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। তবে বিপিএল শুরুর মাত্র দুই দিন আগেও তার বাংলাদেশে আসা নিয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য দিতে পারেনি দলটি।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পর্দা উঠবে বিপিএলের দ্বাদশ আসরের। সুষ্ঠু ও পেশাদার ব্যবস্থাপনায় এবারের আসর আয়োজনের প্রত্যাশা থাকলেও, টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে চট্টগ্রাম রয়্যালসের এমন সিদ্ধান্ত বিসিবিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

উল্লেখ্য, এবারের নিলামে চমক দেখিয়ে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় জাতীয় দলের ওপেনার নাঈম শেখকে দলে ভিড়িয়েছিল চট্টগ্রাম রয়্যালস। কিন্তু আসর শুরুর আগেই দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা।