একযুগ ধরে অচল দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্র

দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণের একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি প্রায় এক যুগ ধরে অচল। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) স্থাপিত অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ের এ ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্র সাম্প্রতিক কোনো ভূমিকম্পেই তথ্য দিতে পারেনি।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের হর্টিকালচার বিভাগের সামনে সিমেন্টের তৈরি একটি নিরাপত্তা ছাউনির নিচে মাটির গভীরে স্থাপন করা রয়েছে ফ্রিকোয়েন্সি পাঠানো যন্ত্রের মূল প্লেট। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় কন্ট্রোল ইউনিট–ডিসপ্লে দেখা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়—যন্ত্রের কন্ট্রোল ইউনিটসহ পুরো সিস্টেমই দীর্ঘদিন ধরে সম্পূর্ণ অচল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমিধস, ভূমির উচ্চতা পরিবর্তন ও সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তায় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতারের নেতৃত্বে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এ যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়েছিল। প্রথম বছর সচল থাকলেও এরপর থেকেই এটি বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।
আরও পড়ুন: চাচিকে বিয়ে করে ফেসবুকে পোস্ট দিল ভাতিজা
বিজ্ঞাপন
পবিপ্রবির ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এস এম তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “বিশ্বজুড়েই এখনো ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা প্রদানের মতো যন্ত্র আবিষ্কার হয়নি। আমাদের এখানে থাকা মেশিনটি পুরনো ও এনালগ সিস্টেমের, যেখান থেকে খুব বেশি তথ্য পাওয়ার সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা যৌথভাবে গবেষণায় যুক্ত হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ভূমিকম্প পূর্বাভাস, সতর্কবার্তা এবং প্রস্তুতিমূলক তথ্য সরবরাহের মতো প্রযুক্তি তৈরি করা সম্ভব।”
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় গণপিটুনিতে তিনজনের মৃত্যু
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হেমায়েত জাহান জানান, “অনেকে এটিকে সিসমোগ্রাফ বলে মনে করেন, কিন্তু আসলে এটি ভূমির ওঠানামা পরিমাপের যন্ত্র। তবে ভূকম্পন রেকর্ড করতেও এটি সক্ষম। এখন পুরো যন্ত্রই অচল। এ অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তা বিবেচনায় একটি আধুনিক যন্ত্র স্থাপনের জন্য আমরা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছি।”
উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের দাবি—জরুরি ভিত্তিতে দক্ষিণাঞ্চলে অত্যাধুনিক ভূকম্পন মাপার যন্ত্র স্থাপন করা হোক। তাদের বিশ্বাস, এমন প্রযুক্তি থাকলে অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে হাজারো মানুষের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হবে।








