দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্রাবাস ২৩ বছর ধরে পরিত্যক্ত

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার একমাত্র সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্রাবাসটি দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে বন্ধ পড়ে আছে।
বিজ্ঞাপন
যেখানে থাকার কথা ছিল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের, সেখানে এখন বসবাস করছে স্থানীয় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবার; কক্ষগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে গরু-ছাগল রাখার স্থান হিসেবে। ভবনের একাংশে চলছে অস্থায়ী দোকানও।
২০০২ সালে ৪ একর জমিতে ৪টি ভবন নির্মাণ শেষে কয়েকদিন চালু থাকা এই ছাত্রাবাসটি অল্প সময়ের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। দুই যুগ পর আজ এটি জরাজীর্ণ, দখলকৃত ও অব্যবস্থাপনার চিত্রে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুলাউড়ায় আমনের বাম্পার ফলন
বিজ্ঞাপন
সশরীরে পরিদর্শনে দেখা গেছে, দুটি ভবনে বর্তমানে বসবাস করছে স্থানীয় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর চারটি পরিবার। কোথাও গরু-ছাগলের বাঁধার চিহ্ন, কোথাও খড়ের স্তূপ, আবার কোথাও রান্নার চুলা—সরকারি ছাত্রাবাস পুরোপুরি এক বসতবাড়িতে রূপ নিয়েছে।
এদিকে দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজে দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
বাবুছড়া, মারিশ্যা, মনেরমানুষ (লঙ্গদূর), বাগাপাড়া ও পার্শ্ববর্তী দুর্গম এলাকার অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিন লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে এই কলেজে পড়াশোনা করতে আসে। স্থানীয় পরিবহন সমস্যা, পাহাড়ি পথের ঝুঁকি এবং দীর্ঘ যাতায়াতের কারণে তাদের জন্য আবাসন সুবিধা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু ছাত্রাবাসটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে শিক্ষার্থীদের।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত
দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তরুণকান্তি চাকমা এ বিষয়ে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ছাত্রাবাসটি চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নিচ্ছি। খুব শিগগিরই ছাত্রাবাসটি পুনরায় শিক্ষার্থীদের জন্য চালুর ব্যবস্থা করা হবে।’
স্থানীয়রা জানান, চালু হওয়ার কয়েক মাস পর থেকেই পরিচর্যার অভাবে ছাত্রাবাসটি অচল হয়ে পড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি এই স্থাপনায় বসবাস শুরু করে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কয়েকটি পরিবার। ফলে মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারি সম্পত্তি।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, ‘আমি দীঘিনালায় নতুন যোগদান করেছি। ছাত্রাবাস নিয়ে ইতোমধ্যে অভিযোগ পেয়েছি। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে—কীভাবে ছাত্রাবাসটি পুনরায় শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রত্যাশা, দীর্ঘদিনের দখল-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করে ছাত্রাবাসটি চালু হলে দুর্গম এলাকা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর হবে, বাড়বে শিক্ষার সুযোগ এবং নিরাপত্তা। কলেজের শিক্ষা-পরিবেশও ফিরবে স্বাভাবিক ধারায়।








