সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে শহীদ জাহাঙ্গীর, পাকুন্দিয়ায় শোকের মাতম

সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন এবং আরও আটজন আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
নিহতদের মধ্যে মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (৩০) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মো. হজরত আলী রহমানের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বড় ভাই মোস্তফা কামাল সৌদি আরব প্রবাসী এবং ছোট ভাই শাহীন আলম পেশায় গাড়িচালক।
সন্ত্রাসী হামলায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের শহীদের খবর পৌঁছালে তাঁর গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মাত্র ৩৭ দিন আগে তিনি সুদানের আবেই অঞ্চলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীরা ড্রোন হামলা চালায়। এতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ এবং আটজন আহত হন। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফুর ইসলাম বাধন বলেন, শনিবার রাতে জাহাঙ্গীরের সহকর্মী মনির হোসেন ফোনে বিষয়টি জানান। পরে ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইমরান আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খবরটি শোনার পর থেকেই পরিবারে শোকের মাতম চলছে। বৃদ্ধ বাবা হজরত আলী রহমান বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার স্বামীর ছবি আর তিন বছরের ছেলে ইফরানকে বুকে জড়িয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছেন। মাঝে মাঝে চিৎকার করে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। সদা বিনয়ী জাহাঙ্গীরের অকাল মৃত্যুতে আশপাশের গ্রামগুলোতেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের মামা ওয়ালিউল্লাহ বলেন, রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ক্যাপ্টেন ইমরান আমাদের বিষয়টি অফিসিয়ালি জানিয়েছেন। তার আগেই শনিবার রাতে আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে আমরা মৃত্যুর খবর পাই।
জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মো. শাহীন বলেন, রাত দেড়টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখি সবাই কান্নাকাটি করছে। পরে জানতে পারি আমার ভাই বোমা হামলায় শহীদ হয়েছে। এ কথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: পাকুন্দিয়ায় গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা
নিহতের বাবা হজরত আলী রহমান বলেন, রাতে এক ভাই ফোন করে বলছিল সুদানে বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। পরে জানতে পারি সন্ত্রাসীরা বোমা মেরে আমার ছেলেকে শহীদ করেছে।
এই ঘটনার পর থেকে জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পরিবারটি মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপম দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এখনো কোনো সরকারি নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।








